রবিবার রাতে ঘুর্নিঝড়ে সারা দেশে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ঝড়ে প্রানগেছে অনেক মানুষের। কিছু এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে ফসলের।এলাকা ভিত্তিক ফসলের ক্ষতির পরিমান মারাত্মক।চাষীদের অনেকে দুশ্চিন্তায় পড়েছে।


কৃষি নির্ভর বাংলাদেশ। গোলা ভরা ধান আর পুকুর ভরা মাছ ছিলো একসময়ের নিত্যকার রুটিন।কৃষকরা নগদ(হাড়ি)জমায় জমি নিয়ে ধান চায করেছে।বোরো ধান রোপনের সময় সার, ঔষধ,ডিজেল সহ কিষানের দাম বেশি থাকায় খরচ তুলনামূলক অনেক হয়েছে।মাঠে ধান দেখে বুকে আশা ছিলো সব ধার দেনা শোধ করে লাভের মুখ দেখবো।কিন্তু বিধিবাম।এমন হতাশার কথা শোনা যাচ্ছে কৃষকের মুখে মুখে।

উপজেলা কৃষি আফিস সূত্রে জানা গেছে এ বছর চিতলমারী উপজেলার ২১টি ব্লকে বোরো ধান চাষ করেছে কৃষকরা।৭ ইউনিয়নের ২১টি ব্লকে ২৮হাজার৫২৮একর জমিতে হাইব্রিড ও ৩৮৩একর জমিত উফশী জাতোর ধান চাষ হয়েছে।৩০হাজার পরিবার ধানচাষে জড়িত।বাংলাদেশের অর্থনৈতিক মেরুদন্ড ধান চাষের উপর নির্ভর।

মৌয়া পোকার আক্রমণে দিশেহারা কৃষক।কোন ভাবেই ঔষধ, ছাই দিয়ে কারেন্ট বা মৌয়া পোকাকে দমনে আনা যাচ্ছেনা।দিনকে দিন ক্ষেতের অবস্থা খারাপ হচ্ছে।সেই সময় কালবৈশাখীর প্রবল ঝড়ে তছনছ হয়ে গেছে কৃষকের স্বপ্ন।ক্ষেতের ধান পরিপক্ক হবার পূর্বে হঠাৎ ঝড়ে ধানগাছ গুলোর পাতা রৌদ্রে শুকিয়ে যাচ্ছে।

ধান ক্ষেতগুলো দেখে যে কেহ কবির ভাষায় বলবে “চিক চিক করে বালি কোথা নেই কাঁদা,চারিদিকে কাশবন ফুলে ফুলে সাদা”।ধাসের বাইলগুলে কাশফুলের মতো আকার দিনকে দিন ধারণ করছে।
সন্তোষপুর গ্রামের সুশীল সাধক,শচীন রায়,রাসমোহন মালাকার চৌদ্দহাজারী গ্রামের জগো বিশ্বাস,লড়ারকুলের হানিফ মৃধা,বাবুয়ানার নলিন, সুশান্ত,অসিত বাড়ৈ,কালশিরার সুশান্ত ব্রক্ষ্ম,অপূর্ব,সুড়িগাতীরউজ্জ্বল,উমাজুড়ীর অসীম বাড়ৈ, কাটিপাড়ার শহীদ, রোকাগাজী, কুরমুনি, কুরালতলা, বড়বাড়িয়া গ্রামের বিভিন্ন চাষীরা তাদের ক্ষয়ক্ষতির কথা অকোপটে স্বীকার করে।

রাসমোহন বলেন ঝড়ো বাতাসে আমার দুইবিগা জমির ধান অর্ধেক বাড়িতে আসবেনা।যার অর্ধেকাংশ চিটা হয়ে যাবে।এবার ধান চাষে খুব লস হবে।জগো বিশ্বাস এই প্রতিবেদককে বলেন আমরা বিলে জমি দেরি করে লাগাই।ধান নামিতে বের হবার সময় ঝড়ো বাতাসে ধান চিটা হবে অর্ধেক বা তারো বেশি।আনেকে আবার ধান কাটতে পারবে না।ক্ষতি যা হবার হয়েছে,এখন আমাদের ক্ষতিটা যদি সরকারী ভাবে কিছু অনুদান দিয়ে পুষিয়ে নেওয়া যেতো।

এছাড়া বিভন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে ক্ষেতের ধান গাছের পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।একদিকে কারেন্ট পোকার আক্রমণ অপর দিকে ঝড়ের ক্ষতি।
চিতলমারী কৃষি অফিসের উপ সহকারী কৃষিকর্মকর্তা (ব্লক সুপারভাইজার) শংকর মজুমদার,মৃদুল বিশ্বাস, বলেন ঝড়ে প্রচন্ড ক্ষতি হয়েছে কৃষকের।গতকাল কুরমুনি এলাকায়অনুকুল বিশ্বাস সহ কযেকজন কৃষকের ঘের পরিদর্শনে গিয়ে নষ্ট ধান ক্ষেত থেকে তুলে নিয়ে এসেছি।

আজকে এখন বড়বাড়িয়া ইউনিয়ন বিভিন্ন কৃষকের ধানক্ষেত দেখতে যাচ্ছি।সকালে সন্তোষপুর গ্রামের ধান দেখতে আসে। তিনিও বলেন কৃষকের অপুরনীয ক্ষতি হয়েছে।

এ ব্যাপারে কৃষিকর্মকর্তা ঋতুরাজ সরকার বলেন প্রাকৃতিক দূর্যোগ কাউকে বলে আসে না। ঝড়ে কৃষকের ক্ষতি হয়েছে যা পুরণ করতে কৃষকদের সামনের বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে। সাময়িক ভাবে ক্ষতিটা কৃষকরা অন্য ফসল চাষাবাদ করে কিছুটা পুষিয়ে নিতে পারবে বলে আমি আশা করি।